1. admin@adibanglatv.com : Adi Bangla TV :
  2. admin2@adibanglatv.com : admin :
  3. info.khanromim@gmail.com : Khan Romim : Khan Romim
বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ অপরাহ্ন

গোপনে দেশ ছেড়ে পালালেন ফ্যাসিস্টের দোসর নাজনীন মুন্নি, খুঁজছেন রাজনৈতিক আশ্রয়

স্টাফ রিপোর্টার
  • Update Time : বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫
  • ২ Time View

জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার উপর হামলা, ছাত্র-জনতা হত্যায় উস্কানিসহ ঘাড়ে ৫০০ কোটি টাকার মামলা নিয়েও অন্তবর্তি সরকারের কঠোর নজরদারির ফাঁক গলিয়ে অত্যন্ত গোপনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকনের ঘনিষ্ট বান্ধবী বিতর্কিত ফ্যাসিস্ট নাজনীন মুন্নি। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরে লাগামহীন দুর্নীতি ও অনাচারে অভিযুক্ত এই মুন্নি কিভাবে পালালেন এ নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। নুন্যতম ব্যক্তিত্ব জলাঞ্জলি দিয়ে মিডিয়ায় নেচে বেড়ানো এই বেহায়া গত ২ নভেম্বর রোববার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট দিয়ে হিজাব, বোরখা ও মাস্ক পরে দেশ ত্যাগ করেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট শাখার কোন কোন কর্মকর্তা তাকে পালাতে সহায়তা করেছে তা নিয়ে গণমাধ্যমে চলছে নানা গুঞ্জন। অভিযোগ উঠেছে, গ্লোবাল টিভির মালিকপক্ষের নির্দেশে বিএনপি বিটের একজন রিপোর্টার নাজনীন মুন্নির যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সহায়তা করেছেন। এছাড়া, এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশনে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ লোকজন, তারাও পার হতে সহায়তা করেছে চতুর মুন্নিকে।
মুন্নির ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তি জানান, চব্বিশের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মিডিয়া তার পেছনে যেভাবে লেগেছে, তাতে তিনি কিছুতেই টিকতে পারছিলেন না। মুন্নি তার ঘনিষ্ঠ মহলে অহরহই বলে বেড়ান, গ্লোবাল টিভি তাকে বিশেষ এক কারণে চাকরি দিলেও মালিকপক্ষ কিছুতেই তাকে সহ্য করতে পারছিলো না। তাদের আচরণ ’ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা’। এমন পরিস্থিতিতে চাকরি করা যায় না। অর্থাৎ, গ্লোবাল টিভির মালিক মুন্নিকে গিলতেও পারছিলো না, আবার ছাড়তে পারছিলো না। তিনি শেষ পর্য্ন্ত কোন দেশে গেছে তাও কাউকে বলেননি। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি আপাতত আমেরিকা গেছেন, সেখান থেকে চেষ্টা করবেন এসাইলাম নিতে। তাতেও ব্যর্থ হলে আবার ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরবেন। পুরো বিষয়টি তিনি অত্যন্ত সাবধান ও গোপনীয়তায় হ্যান্ডেল করছেন। যদিও বিমানে উঠে খুশিতে টগবগিয়ে নিশ্চিন্ত মনে তিনি নিজেই নির্লজ্জের মতো ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন- টিকেটের টাকা বাকি রেখে পালিয়ে গেলেন নাজনীন মুন্নী। অবশ্য এর কমেন্টে একজন লিখেছেন, আপনার পক্ষে সব সম্ভব। অনেকেই দাবি করে বলছেন, নাজনীন মুন্নি দেশে ফিরলে বিমানবন্দর থেকেই তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ এবং তাকে দেশত্যাগে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের সম্পর্কে তথ্য নিয়ে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। না হলে এভাবেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসররা পার পেয়ে যাবে।
আগেই বলেছি, নাজনীন মুন্নি বর্তমানে একটি অত্যন্ত বিতর্কিত, রহস্যময়, বেহায়া ও নাটকীয় চরিত্র। তাকে নিয়ে নানা মিডিয়ায় নাটকও কম হয়নি। যেমন, তীব্র সমালোচনার মুখে কিছু দিন অফ রাখার পর তাকে আবার টকশোতে উপস্থাপনায় ফেরায় গ্লোবাল টিভি। চ্যানেল কর্তৃপক্ষের এমন অদ্ভূত কাণ্ডে সাধারণ দর্শকরা হতাশ ও হতভম্ব। অনেকেই এরপর মন্তব্য করেন, চ্যানেলটির মালিক কি বোধির নাকি অন্ধ? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারন মানুষ এই মহিলা সম্পর্কে কি ধরনের মন্তব্য করে তা পড়ে দেখে না? তবু একেই স্ক্রিনে রাখতে হবে কেনো! মুসলিম অধ্যুসিত এই দেশে টকশোতে তো এর কাপড়ও ঠিক থাকে না। গণমাধ্যমে তার ঘনিষ্ঠদের সাথে আলাপে জানা গেছে, একাত্তর টিভি, ডিবিসিসহ যেসব প্রতিষ্ঠানে অতীতে তিনি চাকরি করেছেন, সেসব প্রতিষ্ঠানের তৎকালীন ম্যানেজমেন্ট তাকে দিয়ে মূল দায়িত্বের বাইরে বহুজাতের কাজ করাতেন। তখনকার মালিক পক্ষের নিম্নমানের সাইড পারপাস তিনি হাসিমুখে আগ্রহের সাথে সম্পাদন করতেন। এ কারনে অল্প দিনেই তিনি তাদের অতি নিবিড় হয়ে উঠতেন। মুন্নির উচ্ছিষ্ট কুড়ানো একপাল স্টাইলিস্ট একই কাজে তাকে সঙ্গ দেন। পদস্থদের কাছে এ যেনো মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।
আওয়ামীলীগ পূনর্বাসনের অভিযোগে গ্লোবাল টিভির টকশো থেকে নাজনীন মুন্নিকে প্রত্যাহার, আবার ফেরার আভাস’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের কয়েকদিন পরই ওই চ্যানেলে মুন্নি একই টকশো শুরু করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিলো, ‘গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, পতিত আওয়ামী বলয়ের অদৃশ্য ওই হাতের ইশারায় নাজনীন মুন্নি ফের টকশোটিতে উপস্থাপনা চালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছেন।’
কিছুদিন গা ঢাকা দেয়ার পার তিনি আবার গর্ত থেকে সেজেগুজে বের হন। গ্লোবাল টিভি কর্তৃপক্ষই তাকে আবার টকশোতে বসিয়েছে। আগের প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর অনেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানিয়েছে। এখন অনেকে বলছে, তাকে হয়তো শক্তিশালী অদৃশ্য এক হাতের ইশারায় স্ক্রিনে আনতে হয়। নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক এমপি আওয়ামী লীগ নেতা কিরনের মালিকানাধীন চ্যানেল গ্লোবাল টিভিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে এসব ঘটনার কারণ জনসম্মুখে আনা প্রয়োজন বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এই টেলিভিশন কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য কি, সেই টার্গেটে কারা জড়িত, রাতের আঁধারে কারা সেখানে যাতায়াত করে-সব কিছুর তদন্ত চায় সচেতন মহল।
নাজনীন মুন্নি সম্পর্কে নেটিজেনদের মন্তব্য পড়লে জাগে অন্তহীন বিস্ময়। বাংলা এডিশনে আগের প্রতিবেদনের নিচে মন্তব্যে মীর মোশাররফ নামের একজন লিখেছেন- ‘কি বলবো বুঝতেছিনা, এরা ইন্ডিয়ান মাল, বাংলাদেশ এরা কখনও নিজের দেশ মনে করে নাই…’ মোহাম্মদ মুসলেহ উদ্দিন লিখেছেন, ‘ইয়েস , তাকে আইনের আওতায় আনা হউক’। মনি লিখেছেন, ‘এটা ছিল আওয়ামী লীগ এর মুখপাত্র।’ মজুমদার রাসেল নামের একজন লিখেছেন, ‘এই মহিলার অনেক চরিত্র।’ শাহ আলম লিখেছেন, ‘কুমিল্লায় পুজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরীফ রাখার নাটকে তার কি ভুমিকা ছিল তা এখন জিঙ্গাসাবাদ করা উচিত।’ তাকে ঘিরে এমন হাজারো দাবি-দাওয়া, মন্তব্যে ছেয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
গণমাধ্যমের অনেকের মতে, ভিন্ন মত ও পথের হাজারো কর্মী ঢাকাসহ সারাদেশে টিভি, পত্রিকাসহ গণমাধ্যমের সব শাখায় নির্বিঘ্নে কাজ করছে। কাউকে নিয়ে এই মহিলার মতো এতো বিতর্ক দেখা যায় না। তবু এমন ভয়ংকরকেই কেনো দুধ-কলা দিয়ে পুষতে হবে। এতে গ্লোবাল টিভি মালিকের স্বার্থ কোথায় তা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার স্বার্থে সরকারকেই তদন্ত করে বের করতে হবে- এ দাবি সচেতন মহলের।
শুরুতে বলেছি, নাজনীন মুন্নির ঘাড়ে ঝুলছে ৫০০ কোটি টাকা। এ তথ্যের সত্যতা মিলবে বাংলা ট্রিবিউনে। ২০২৪ সালের ১০ জুন বেলা ৩টা ২১ মিনিটে পোর্টালটিতে আপ করা প্রতিবেদনে বলা হয়- দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ডিবিসি নিউজে মানহানিকর বক্তব্য প্রচারের ঘটনায় ৫০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে নাজনীন মুন্নীসহ ৬ জনকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। মো. শাহজাহান, ডিবিসি নিউজের সঞ্চালিকা নাজনীন মুন্নী, প্রধান সম্পাদক এম. মঞ্জুরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল আহসান এবং চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহানকেও এই নোটিশ পাঠানো হয়। ২০২৪ সালের ৯ জুন ব্যারিস্টার এম. সরোয়ার হোসেনের পক্ষে এই নোটিশ পাঠানো হয়। প্রতিবেদনটি এখনও বাংলা ট্রিবিউনে রয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 adibanglatv