দলের প্রতীক হিসেবে শাপলা পাওয়ার দাবিতে অনড় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। জাতীয় প্রতীকের সঙ্গে সাদৃশ্যের বিতর্কে সামনে আসায় বিষয়টি নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। তবে জটিলতা কাটাতে দলটি এবার শাপলার ভিন্ন ভিন্ন রূপে ৭টি নকশা তৈরি করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে উপস্থাপন করেছে।বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে এনসিপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শাপলার এই ৭টি নমুনা প্রকাশ করা হয়। পোস্টে দলটি জানায়, এগুলোই তারা ইসির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করেছে— যাতে প্রতীক নিয়ে বিভ্রান্তি না থাকে এবং জাতীয় প্রতীকের সঙ্গে মিল থাকলেও স্পষ্ট ভিন্নতা দেখা যায়।এর আগে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে দলটি নির্বাচন কমিশনকে জানায়, ৩০ সেপ্টেম্বর ইসি সচিবালয় থেকে পাঠানো পত্রের জবাবে তারা নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছে।
চিঠিতে বলা হয়, গত ২২ জুন এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন দাখিল করে। সেই আবেদনপত্রে তারা দলের প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ সংরক্ষণের অনুরোধ জানায়। পরে ৩ আগস্ট আরেকটি চিঠিতে দলটি পছন্দের ক্রম হিসেবে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ ও ‘লাল শাপলা’ উল্লেখ করে।এনসিপি জানায়, তারা প্রতীক হিসেবে শাপলাকে দৃশ্যমান করার ক্ষেত্রে ভিন্নতা রাখতে আগ্রহী— এমনকি প্রয়োজনে ‘আংশিক বিকৃত’ বা নকশায় কিছু পরিবর্তন আনতে আলোচনায় রাজি রয়েছে।নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকগুলোতেও দলটি এই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে। তারা জাতীয় প্রতীকে থাকা শাপলার পরিবর্তে নিজেদের নকশা করা ৭টি বিকল্প শাপলার নমুনা উপস্থাপন করে। চিঠির সঙ্গে যুক্ত করা সেই ৭টি নকশার বিষয়ে দলটি জানায়— প্রয়োজনে এর বাইরেও কোনো আংশিক ভিন্ন সংস্করণ নিয়ে আলোচনায় তারা প্রস্তুত।
এরপর গত ২৪ সেপ্টেম্বর এনসিপি ইসির কাছে আরেকটি আবেদন দাখিল করে— যাতে বিধিমালা সংশোধন করে শাপলা প্রতীকটি তাদের জন্য তালিকাভুক্ত করে বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।কিন্তু দলটির দাবি, এখনো পর্যন্ত ওই দুটি আবেদন— ৩ আগস্ট ও ২৪ সেপ্টেম্বরের— কোনোটি নিয়েই নির্বাচন কমিশন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। তাই ৩০ সেপ্টেম্বর ইসির পাঠানো সর্বশেষ চিঠিকে তারা ‘বিধিসম্মত নয়’ বলে মনে করে।এনসিপির ভাষ্য অনুযায়ী, শাপলা প্রতীকটি এখন তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রতীককে ঘিরে ইতোমধ্যে একটি মানসিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ তৈরি হয়েছে।চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘শাপলা আমাদের কর্মী, নেতা ও সমর্থকদের সঙ্গে দেশের জনগণের এক সুন্দর বন্ধনের প্রতীক। জনগণের ভালোবাসাকে উপেক্ষা করার কোনো শক্তি আমাদের নেই। তাই শাপলা ছাড়া অন্যকোনো প্রতীক বেছে নেওয়া এনসিপির পক্ষে সম্ভব নয়।’
Leave a Reply